২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

ইসলামে বিয়ের আগে ও পরে কোরান হাদিসের আলোকে।

আমাদের সমাজে কিছু প্রথা আছে আজকে এই প্রথার বিরুদ্ধে কিছু লিখতে যাচ্ছি।
ইসলামে নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিয়ে করানোর কথা বলা হয়েছে। *
 ছেলেদের বিয়ে করতে কারো অনুমতির দরকার হয় এমন কোন হাদিস আপনি পাবেন না।
 কিন্তু মেয়েদেরকে তাদের অভিবাভকের অনুমতিতে বিয়ে করতে হবে। দেখুন নিচের হাদিসে “যে নারী তার অভিভাবকের সম্মতি ছাড়াই নিজে নিজে বিবাহ করে, তার বিবাহ বাতিল, বাতিল, বাতিল।” (আহমাদ,আবু দাউদ,তিরমিযী,ইবনে মাজাহ,দারেমী,মিশকাত ৩১৩১ নং)
 বিধবার বিয়ে তার পরামর্শ ছাড়া এবং কুমারী মেয়ের বিয়ে তার অনুমতি ছাড়া করানো যাবে না। (বুখারী ৫১৩৬) ,

 আজকের এই ব্লগটি এইজন্য কারণ আমার এক খালাতো ভাই নিজ পছন্দ অনুযায়ী বিয়ে করবে। মেয়েদের পরিবারের সবাই রাজি কিন্তু খালাম্মা এই বিষয়ে একদম অমত। , খালাম্মা আসলেই ইসলাম বিষয়ে এতোটা জানে না । এই জন্য কত কিছু হল। কিন্তু ভাই নিজের পছন্দেই বিয়ে করলেন। আর ইসলামে এ বিষয়য়ে সমর্থন আছে। মনে রাখতে হবে, বিবাহ নিছক ভোগ-বিলাসের উদ্দেশ্যে চঞ্চল মনের ভাবাবেগ তাড়িত কোনো বন্ধন নয়, এটি কোনো ছেলেখেলাও নয় বরং এটি হলো, আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক প্রদত্ত ও নির্দেশিত নারী-পুরুষের সারাজীবনের একটি চিরস্থায়ী পূত-পবিত্র বন্ধন। এজন্য ইসলাম বিবাহের ক্ষেত্রে পাত্র-পাত্রীর মতামতকে ‘চূড়ান্ত মতামত’ হিসাবে সাব্যস্ত করলেও পাশাপাশি অভিভাবকের মতামতকেও সবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।

 সমাজের খুশিতে কি লাভ , বরং আমার লক্ষ্য হল আল্লাহর খুশি, এতে কে বেজার কে খুশি আমি তা দেখিনা। আমাদের সমাজে কোরান হাদিস মানে এমন লোক খুবই কম। তারা সমাজের রীতিনীতি অনুসারে চলে। দেখুন আমদের সমাজে কিন্তু ভাই , ভাইয়ের বউ সবাই একসাথে থাকে । এটা কিন্তু ইসলামের পথে বাধা সরূপ, কেননা আপনের বউ আরেকভাই দেখবে কেন? ইসলামে কোথায় পেলেন এই বিষয়। ।

 আমদের সমাজে ছেলের বউকে শাশুড়িরা এমনভাবে খাটায় যেন এরা কেনা গোলাম। আপনি কি জানেন এভাবে তার প্রতি জুলুম হচ্ছে। আপনি কি জানেন আপনি কেন বিয়ে করেছেন, কোরান কখনো পড়েছেন কি? দেখুন কোরানে কি বলা হয়েছে। যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।” (সূরা রুম : আয়াত ২১) “তারা (স্ত্রীগণ) তোমাদের পোশাক এবং তোমরা (স্বামীগণ) তাদের পোশাকস্বরূপ।” (সূরা বাকারা : আয়াত ১৮৭)

মা বাবার খেদমতের বিরুধী করছিনা, তা আপনি নিজে আদায় করবেন, অথবা একজন দাসি নিযোক্ত করবেন। যদি তাতে অসমর্থ থাকেন তাহলে নিজের বউকে বুঝান তার কাছে ক্ষমা চান, মা বাবার খেদমত করার জন্য তাদের পারিশ্রমিক দিন। আর স্ত্রীর কর্তব্য হল স্বামীর আদেশ পালন করা। এভাবেই ইসলাম।

যার যার সম্পত্তি নিজের মালিকানা ক্লিয়ার করে রাখা। কেননা ইসলামে সম্পদের উপর অনেক ইবাদত আছে। যাকাত, দান......। এমনকি বউয়ের সম্পত্তিও কেননা আল্লাহ বলেছেন... আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশি হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর।” [সূরা নিসা : আয়াত ৪]
 কি বুঝলেন?
 বউয়ের সম্পদের উপর আপনার কোন হাত নাই। যদিও এই সম্পদ আপনিই তাকে দিইয়েছেন। তবে আল্লাহ এই কথাও বলেছে যে তারা যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে আপনাকে দিয়ে দেয় তার কথা সতন্ত্র। এভাবে অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ক্ষেত্রেও। আপনি কোন বিচারে বউয়ের জিনিস ব্যাবহার করবেন? হউক তা চিরুনি।

 তবে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মালিকানা ভিন্ন হওয়ায় অনুমতি ছাড়া একে অন্যের সম্পদ ব্যয় করা অবৈধ। স্বামী যদি নিয়মমাফিক ভরণ-পোষণ ও স্বাভাবিক হাত খরচের প্রয়োজন পূরণ করে থাকে, তাহলে তার কাছ থেকে তার অগোচরে টাকা-পয়সা নিয়ে নেওয়া এবং তাকে না জানিয়ে বিভিন্ন খাতে ব্যয় করা বৈধ হবে না। (আলবাহরুর রায়েক : ৪/১৭৭)

 কিন্তু এসব জিনিস আপনাকেই কিনে দিতে হবে। কেননা আল্লাহ বলেছেন তোমরা স্ত্রীদের জন্য তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী নিজেদের ঘরে বাসস্থানের ব্যবস্থা করো।’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ৬)


স্ত্রী যদি উচ্চবিত্ত পরিবারের মেয়ে হয়, তাহলে সে যদি স্বামীর যৌথ পরিবার থেকে ভিন্ন ঘরের দাবি করে, তাহলে স্বামীর সামর্থ্য অনুযায়ী তাকে ভিন্ন ঘরের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। স্বামীর মা-বাবার সঙ্গে যৌথভাবে থাকতে স্ত্রী বাধ্য নয়। আর মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে হলে তাকে স্বামীর পরিবারের সঙ্গে এক ঘরে রাখা গেলেও তার পৃথক কক্ষ, টয়লেট, গোসলখানা, রান্নাঘরসহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিস ভিন্ন করারও দাবি করতে পারবে। এ ক্ষেত্রেও স্বামীর পরিবারের সঙ্গে যৌথভাবে থাকতে স্ত্রীকে বাধ্য করা যাবে না। আর নিম্নবিত্ত পরিবারের হলে টয়লেট, গোসলখানা, পাকের ঘর ইত্যাদি ভিন্ন দিতে বাধ্য না হলেও তার জন্য একটি পৃথক কক্ষের ব্যবস্থা অবশ্যই করতে হবে, যার হস্তক্ষেপ স্ত্রী ছাড়া অন্য কেউ করতে পারবে না। ওই কক্ষে স্বামীর মা-বাবা, ভাই-বোন বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করতে পারবে না। স্ত্রীর এমন সংরক্ষিত কক্ষ দাবি করার অধিকার আছে। (বাদায়েউস সানায়ে : ৪/২৩, রদ্দুল মুহতার : ৩/৬০১)

 কোন অভিযোগ থাকিলে দলিল চাহিবেন, কিতাব দিয়ে জীবন চালাতে চেষ্টা করি বানানো কোন কথা পেলে অবশ্যই কমেন্ট করুন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন